আবার পেইন্টিং ১

পিনাকী ভট্টাচার্য

ইউরোপের রেনেসাঁর কথা আমরা জানি। জগতের সমস্ত সৃষ্টিতে ঈশ্বরের মহিমা বদলে মানুষ নিজেই সব সৃষ্টি করেছে এই ধারণা ইউরোপ গ্রহণ করে। মানুষকে সে সব কিছুর কেন্দ্রে বসায়।

রেনেসাঁর ফলে শিল্পে সূচিত হয় বিপ্লব। ধর্ম বা স্বর্গীয় প্রভাব থেকে শিল্প মুক্ত হবার চেষ্টা করে। পেইন্টিঙে স্বর্গীয় চরিত্রও মানুষের অভিব্যক্তি দেখা যেতে শুরু করে। এর আগে ডিভাইন চরিত্রগুলো সহজেই চেনা যেত। এখান আর চেনা যাচ্ছেনা। দেখে মনে হয় আমাদের আশেপাশের মানুষ। রেনেসাঁ পেইন্টিং এ মুলত দুইটি ধারা আর্লি রেনেসাঁ আর হাই রেনেসাঁ।

আর্লি রেনেসায় যখন ডিভাইন চরিত্রগুলো মানুষের রূপ নিতে শুরু করলো তখন সে অবধারিত ভাবে স্পিরিচুলিটি হারালো। এই রেনেসাঁ ধারাতে থেকেও চরিত্রগুলো মানুষের মতো রেখেও কীভাবে স্পিরিচুলালিটি ফেরত আনা যায় সেটাই হাই রেনেসাঁর কাজ। হাই রেনেসাঁর দুই বিখ্যাত শিল্পী লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি আর মিকেলাঞ্জেলো। আর্লি রেনেসাঁর শিল্পী বত্তিচেল্লি।


ইটালির রেনেসাঁ শিল্পী ভেরচ্চিওর এই ছবিটায় আর্লি আর হাই রেনেসাঁর দুই ধারার প্রভাব আছে। ভেরোচ্চিও ছিলেন আর্লি রেনেসাঁর শিল্পী। ছবিটা যীশুর ব্যাপ্টাইজ করার ছবি। যীশুর পায়ের কাছে বসে আছে দুই দেবদূত। ভেরোচ্চিওর ছাত্র ছিলেন লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। ভেরোচ্চিও নিজে একটি দেবদূত আকেন আরেকটা আঁকতে বলেন লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চিকে। পাশের ছবিটা দেখুন, ওই অংশটুকুকে বড় করা হয়েছে। একদম বায়ের ছবি লিওনার্দোর আঁকা আর ডানের ছবি ভেরোচ্চিওর আঁকা।

একটা ছবি আর্লি রেনেসাঁর আরেকটা ছবি হাই রেনেসাঁর। ভেরোচ্চিওর আঁকা ছবিটা দেখুন। একদম স্পিরিচুলালিটি ছাড়া। মনে হয় পাশের বাড়ির বালক। এইটা আর্লি রেনেসাঁ। আর লিওনার্দোর আঁকা? আইডিয়ালি বিউটিফুল, শরীরে এক অপুর্ব বিভঙ্গ, গ্রেইসফুল ভঙ্গি, তাকানো আর শরীরে এক নরম দ্যুতি যেন স্বর্গীয়। এইটা হাই রেনেসাঁ।

Pinaki Bhattacharya

পিনাকী ভট্টাচার্য

ব্লগার, অনলাইন একটিভিস্ট প্রকাশিত বই: ধর্ম ও নাস্তিকতা কমিউনিস্টদের ভ্রান্তি পর্ব, বালাই ষাট, ওয়েদার মেকার, চীন কাটুম

সম্পাদক: আবু মুস্তাফিজ

৩/১৯, ব্লক-বি, হুমায়ুন রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা