সভ্যতার অত্যাবশ্যকীয় কিছু শর্ত

শর্তগুলো আমাদের সমাজে প্রবলভাবে অনুপস্থিত। বিপরীতে অসহিষ্ণুতা, হিংস্রতা, জাহেলিপনা গ্রাস করেছে আমাদের সমাজকে। এর পরিণতি কারো জন্যই সুখকর হবে না। আমাদের হৃদয় সংকীর্ণ হয়ে গেছে, জ্ঞানের তৃষ্ণা আমাদের তৃষ্ণার্ত করে না। আমাদের মরম থেকে সমগ্র উধাও হয়ে যাচ্ছে। এখন খন্ডিত সত্তা নিয়ে মানবিক ভবিষ্যতের ছবি আঁকা দূর কল্পনা মাত্র।


এমন কেন!

অমুকের অশ্লীল ভিডিও বেরিয়েছে, সেটা তার চেহারা কি না তাই খতিয়ে দেখতে দেশের অর্ধেকের বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আবার মাথায় উঠিয়ে ফেলছে। অবশ্যই, একজন নিরপরাধ সেলিব্রেটির এভাবে হেনস্থা হওয়া মানায় না। কিন্তু আয়েশার ধর্ষিত হওয়াটা আসলে তার প্রাপ্য, ও তো সেলিব্রেটি নয়। তাই ওর আত্মসম্মানও থাকতে নেই। অত্যন্ত সত্য কথা।


বাংলাদেশে ‘ভারতের সমর্থনের সরকার’ কাজ করবে না

তিস্তায় বা অন্য কোনো যৌথ নদীর বেলায় পানি, এটা তো বাড়তি; এই পানি ভারত কেন দেবে? অথবা ট্রানজিটের মূল্য কেন দেবে, বিনা পয়সায় পোর্ট ব্যবহার করতে পারবে না কেন, সীমান্তে লোক মারা বন্ধ করা ইত্যাদি। আগেই তো সরকারে সমর্থন দিয়ে রেখেছে! এক কথায় বললে সমর্থন দিয়ে সরকার ক্ষমতায় রাখার মূল্য এতই অমূল্য বা সীমাহীন হওয়ারই কথা। ফলে সেই অমূল্যদানের পরে এরপর আবার বাংলাদেশের আর কোনো মূল্য চাওয়ার আছে এটা তারা গণ্য করতে রাজি না হওয়ারই কথা।


ফ্যাক্ট চেক- মঙ্গল শোভযাত্রা: ধর্মের সাথে সম্পর্ক আছে কি?

ন্যদিকে মঙ্গল শোভাযাত্রার বিরোধীদের বক্তব্য হচ্ছে, এটি হিন্দু ধর্মের আচারনির্ভর। গত ১৩ এপ্রিল বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম-মহাসচিব মুফতি ফায়জুল্লাহ তাদের আপত্তির কারণ হিসেবে বলেন, "এখানে বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তির সাথে পেঁচার মূর্তিও বহন করা হয় মঙ্গল শোভাযাত্রার নামে। আমরা মনে করি এটি নিছক একটি হিন্দু ধর্মীয় রীতি এবং এটি মুসলমানদের জন্য বাধ্যতামূলক করার অধিকার কারো নেই"।


নেপাল-ভারতের সীমান্ত হত্যা থেকে শিক্ষা

এতে স্বভাবতই ফুঁসে ওঠা নেপালি সাধারণ মানুষ, ভারতবিরোধী স্লোগান তুলে সারা নেপাল তোলপাড় করে ফেলেছে। পরিস্থিতি উত্তেজনাকর হয়ে ওঠায় ভারত এক দিন পরই অবস্থান বদলায়। ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় বিবৃতি দিয়ে জানায়, তাদের অবস্থানের রেকর্ড ঠিক রাখার চেষ্টা হিসেবে এসএসবি অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করেছে । আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির হয়ে প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা অজিত দোভাল নেপালের প্রধানমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন। তিনি নিহত ব্যক্তির পরিবারকে সহমর্মিতা জানান এবং তদন্ত করে দেখছেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। ইতোমধ্যে নেপাল সরকার গুলিতে নিহত গোবিন্দ গৌতমকে শহীদ ঘোষণা করে এবং পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় কাঞ্চনপুর জেলার ডোডা নদীর তীরে তার সৎকারের আয়োজন শুরু করে।


'পহেলু খান' হত্যার প্রতিবাদ প্রগতিশীলদেরই প্রথম করা উচিত

অামি অবাক হই, এধরণের ঘটনায় ধর্মভিত্তিক দলগুলোকে মাঠ গরম করার সুযোগ দিয়ে যারা প্রগতিশীল শিবির বলে দাবী করেন তারা দায়সারা গোছের একটি বিবৃতি দিয়েই ক্ষান্ত দেন। তারা যদি জনগণের কাছে বিষয়গুলোর সত্যিকার কারণ ও উগ্র ধর্মীয় রাজনীতির কুফলটি তুলে ধরতেন, তাতে জনগণের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে এগিয়ে নিতে পারতেন। কাজটি সহজ নয় জানি। এই ধরণের ঘটনা নিয়ে শোরগোল করলে মৌলবাদীদের উস্কানো হবে বলে 'সিপিবি' মার্কা চিন্তা থেকে বামদের বের হয়ে অাসা উচিত।


মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়া প্রশ্ন উঠা শুরু হইছে

মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়া যে আপত্তি আর প্রশ্ন উঠতেছে-- আমি মনে করি এই প্রশ্ন সামনের দিনগুলাতে আরও বেশি কইরা উঠবে। আমরা যদি মনে রাখি-- পূর্ব বাংলার এক মৌলিক পরিচয় হইতেছে বৃটিশ আমলে জমিদারের বিরুদ্ধে প্রজার লড়াই। চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের কারনে যে প্রজা তার জমি হারাইছিল-- সেই জমি ফিরা পাওনের লাইগা প্রজার যে লড়াই-- এই লড়াই এর ডাক নাম হইলো 'মুসলমান'; --এই লড়াই থিকা মুসলমানদের উত্থান। এই মুসলমান-- এইটা একটা ফেনোমেনা-- সেইটা কারো ভাল লাগুক আর নাই লাগুক-- এইটাই ১৯৪৭ সালে দেশভাগ কইরা জমিদারকে জমিছাড়া করেছিল।


কঠিন সত্য হলো চুক্তির বাস্তবতা নেই

‘সাবমেরিন কেনা’ ব্যাপারটা আমাদের মিডিয়ায় আস্তে আস্তে যত পেছনে চলে যাচ্ছে, ‘ডিফেন্স প্যাক্ট’ ব্যাপারটা ততই ভাসুরের নাম নেয়ার মতো আকার-ইঙ্গিত থেকে এবার স্পষ্ট হতে শুরু করেছে। এই বিচারে পয়লা এপ্রিল ছিল ‘ডিফেন্স প্যাক্ট’-এর পক্ষে বড় ও প্রকাশ্য উচ্চারণের দিন।


ভাসানী: মৌলভী থেকে মজলুম জননেতা

সন্তোষের বা সুসঙ্গের মহারাজার এক মুসলিম প্রজা কোরবানীর ঈদের সময় অাত্মীয় বাড়ী বেড়াতে যায়। ফেরার দিন তার অাত্মীয়রা হাঁড়ি পাকানো গরুর মাংসের ছালুন তার বাড়ীর অন্যদের খাবার জন্য দিয়ে দেয়। সেই অাধা সিদ্ধ গরুর মাংস বাড়ীতে এসে রান্না করতে শুরু করলে মাংসের ঘ্রাণ অনেকদূর ছড়িয়ে পড়ে।


হেফাজতের সাথে আমার সম্পর্ক

হেফাজত নিয়ে যারা আমার ভুল পাঠ করতেছেন তাঁদের জন্য কিছু লেখা দরকার। আমি আগেও বলছি অনেকবার কিন্তু ফেবুর লেখা হারায়ে যায়। এমনভাবে হারায় যে আগে যারা সে লেখা দেখেন নাই তারা মনে করেন আমি এই কথা কখনো কই নাই।


বাংলাদেশের যাত্রী পরিবহণ

নামটা এসেছে কুষ্টিয়া অঞ্চলের লোকগাথা থেকে। এটা সম্পূর্ন দেশি প্রযুক্তি। স্যালো ইঞ্জিন দিয়ে চলে। জ্বালানি ডিজেল। বডি মেটাল এর। ছাউনি আছে। তবে খুবই দুর্বল ব্রেকিং সিস্টেম এবং খুবই ঝুঁকিপুর্ণ একটি বাহন। এর অন্য নাম ভটভটি।


একটি হালকা নীল রংয়ের রাইটিং প্যাড, কাঠ পেন্সিল ও ৭১র গণহত্যার খসড়া

১৯৭১ সালে জানুয়ারি মাসে ঢাকায় ব্যর্থ বৈঠক শেষে ইয়াহিয়া খান পাকিস্তান ফিরে গেলেন ২৬ শে জানুয়ারি। ফিরে গিয়েই সেনা প্রধান জেনারেল হামিদকে নিয়ে লারকানায় ভুট্টোর অাতিথেয়তা ও হাঁস শিকারের পাশাপাশি বাঙালী নিধনের নীল নকশাটিও তৈরি করে ফেলেন। ১৯৭১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এক সম্মেলনে ইয়াহিয়া খান বললেন, " Kill millions of them and rest will eat out of our hands"(সূত্র: Robert Payne, Massacre, P-55)।


হাসিনার র-কে তুলাধুনাতে টার্গেট কে

গত ১১ মার্চ মহিলা আওয়ামি লীগের এক সভায় প্রধানমন্ত্রী হাসিনা বোমা ফাটানোর মত এক বক্তব্যে বলেন, “২০০১ সালে পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে দেশের সম্পদ বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসলেও তারা আজ ভারত বিরোধিতার কথা বলছে। ভারতবিরোধিতার কথা বিএনপির মুখে মানায় না”। বাসসের বরাতে প্রথম আলো এই সংবাদ ছেপেছে।


দুর্ঘটনার রাজনীতি (প্রথম কিস্তি)

এটি কোনও লেখা নয়। সশব্দে ভাবনা বলা যেতে পারে। শব্দের তো অনুষঙ্গ থাকে। একটা শব্দ আসা মাত্র তার প্রসঙ্গে আমাদের নানা ভাবনা আসে। আসেই। ঠেকান যায় না। সেই চলে আসা ভাবনা, যা কিছুতেই ঠেকান যায় না, তারই একটা গোছান প্রয়াস।


ভারত সফরের আগে প্রধানমন্ত্রী কি তাঁর বাবার দৃষ্টিভঙ্গি একবার পুনর্পাঠ করবেন?

বঙ্গবন্ধুর এরকম ভাবনার পিছনে কতকগুলো সুনির্দিষ্ট কারণ ছিল। ভৌগলিক দূরত্ব সত্ত্বেও পশ্চিম পাকিস্তান যদি পুর্ব পাকিস্তানকে শাসন করতে পারে তবে তিন দিক দিয়ে ভারত পরিবেষ্টিত বাংলাদেশকে ভারত যে অাষ্টে-পৃষ্ঠে বাঁধতে পারে সে অাশাংকা তাঁর ছিল। তাছাড়া ভারত ও পশ্চিম বাংলার বাঙালী পরিচয়ের নীচে অামরা হারিয়ে যাই তাও তিনি চাইতেন না।


বাংলাদেশের বেশীরভাগ দুর্ভাগ্যের জন্য বামেরা দায়ী

গত সপ্তাহে আমি লিখেছিলাম বাংলাদেশের বেশীরভাগ দুর্ভাগ্যের জন্য বামেরা দায়ী। অনেকে এতে রুষ্ট হয়েছেন, এর ব্যাখ্যা চেয়েছে। বাংলাদেশের বামেরা নিজেদের অতীত লুকাতে ওস্তাদ যে তাঁদের নিজের দলিল দেখালে আপনার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হবে। এদের অতীত এত কলঙ্কময়।


কালিকাপ্রসাদ বেঁচে থাকবেন

কালিকাপ্রসাদের প্রয়াণের পর তিনদিন হয়ে গেল, এখনও ঘটনার শক কাটছে না। এরকম নয় যে আমি তাঁকে ব্যক্তিগত ভাবে চিনতাম, কিন্তু শিল্পী, বিশেষতঃ একজন সঙ্গীত শিল্পী, যাঁর কণ্ঠ আমাদের জীবনের বিভিন্ন ওঠাপড়ার মুহূর্তের সঙ্গে জড়িয়ে যায়, তাঁর চলে যাওয়ায় আত্মীয়বিয়োগের ব্যথা তো বাজবেই।


কালিকাপ্রসাদ এর তরে অসামান্য বেদনা

কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য মারা গেছেন বলে ফেসবুকে গতকাল হঠাৎ আক্ষেপ শুরু করলেন পরিচিত বন্ধুরা। আমি ভাবলাম,কে এই কালিকাপ্রসাদ? গান বিষয়ে আমার খোঁজখবর কম বলে হয়ত এ লোকটাকেও আমি চিনি না। পরে জানলাম দোহারের কালিকাপ্রসাদ।


নারী ও বাংলাদেশের প্রগতিশীল রাজনীতি

নারী মুক্তি বিষয়ে তত্ত্ব আওড়িয়ে নিজেকে পন্ডিত হিসেবে জাহির করা এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। প্রগতিশীল রাজনীতিকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরাও লক্ষ্য নয়। বাংলাদেশের প্রগতিশীল রাজনীতিতে নারীর অবস্থান আরো পোক্ত করে এবং এই বিষয়ে বাধাগুলো প্রায়োগিক জায়গা থেকে চিহ্নিত করার আন্তরিক সীমিত প্রয়াস থেকেই এই লেখার জন্ম।


প্রতিটা দিন আমার দিন

৮ মার্চ থেকেই প্রতি দিন হয়ে উঠুক আপনার দিবস। সরল দিনগুলো আপনার সাবলম্বী, সাহসী হয়ে ওঠার জন্য বিশেষ হয়ে উঠুক। যেমনটি হয়েছিলো ক্লারা জেটকিনের জন্য। অবশ্য লাভ যে একেবারেই নেই তা নয়। আমি ফুল, চকলেট, কার্ড ব্যবসায়ী হইলে খুব লাভবান হইতাম এই দিবস দিয়ে!


৩৩ বছরের পুরানা পরিবহন নৈরাজ্য

আমাদের সামাজিক ধারণায় এখনো বল প্রয়োগকেই কোনো সরকারি আইন বা নির্দেশ-নিয়ম বাস্তবায়নের উপায় বলে মনে করা হয়। ড্রাইভার বা সাধারণ মানুষকে আইন মানতে সহায়তা করে, সে দিকে তাকিয়ে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করে যে আইন বাস্তবায়ন করা সম্ভব এবং দরকার সে দিক খুব কমই খতিয়ে দেখা হয়েছে।


৭ই মার্চের ভাষণ ও তার প্রেক্ষাপট

অাইয়ুব খান যেদিন ক্ষমতা ছাড়লেন দিনটি ছিল ২৫শে মার্চ, ১৯৬৯। ইয়াহিয়া খান ২৬ শে ঘোষণা দেন তিনি অবিলম্বে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। সে কথা পূর্বপাকিস্তানের জনগণ বিশ্বাস করেনি। কারণ ১৯৫৮ সালে অাইয়ুব খান ক্ষমতায় এসে একই কথা বলেছিলেন।


বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না, নাই, গণতান্ত্রিক বিপ্লব ছাড়া হবেও না। কেন?

তার মানে, বাংলাদেশের মত দেশে বিশ্ববিদ্যালয় হবার সম্ভাবনা জাতীয় মুক্তির সংগ্রামের সম্ভাবনার সাথেই যুক্ত। এর বাইরে থেকে, টাকা দিয়ে বা বিদেশি বিনিয়োগ করে বা সোমপুর বিহারে আবার সাইন বোর্ড টানিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সম্ভব না।


প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ আরও বেশি বিক্রি হতে পারত

এবারের বই মেলায় সাড়া জাগানো আরিফ আজাদের বই- ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ গতকাল বিকেলে কিছু অংশ পড়েছি। সুদৃঢ় যৌক্তিকতার শীতল পরশ বুলিয়ে মহান সৃষ্টিকর্তায় কঠোর অবিশ্বাসী যে কারো চিন্তাকে যে সহজেই ঈমানের পথে নিয়ে যাওয়া সম্ভব, বইটিতে সেটা সুন্দরভাবে দেখানো হয়েছে।


পরিবহন ধর্মঘটের পুর্নবিচার

আমার সেদিন নতুন অফিসের প্রথম দিন। একটা সিএনজিকে বললাম পল্টন পৌঁছায়া দিতে আড়াই শ টাকার বিনিময়ে। সে রাজি হয় না, তিন শ টাকা চায়। কী করব, কীভাবে যাব সেই চিন্তায় ছিলাম। মাথার উপর বসন্তের ছিলা ধরা রোদ, টানটান। এর মধ্যে একটা বিআরটিসি কোত্থেকে যেন হাজির হইল। এক লাফে তাতে উইঠা বসলাম। সিটের খোঁজে আর গেলাম না। চাকার উপর একটা কোনায় গিয়া দাঁড়ায়া পড়লাম।


প্রকাশকদের অতি মুনাফা-চিন্তা সাহিত্য চর্চাকে ধ্বংস করে দিচ্ছে

প্রকাশকের গলাকাটা মুনাফালোভী মানসিকতার কারণে নবীন লেখকরা যেমন একটা সময়ে নিরুৎসাহিত হয়ে লেখালেখির জগত থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন, তেমনি মাত্রাহীন উচ্চমূল্যের কারণে অসংখ্য পাঠককে খালি হাতে বা দুয়েকটা বই হাতে অতৃপ্তি নিয়েই মেলা থেকে ফিরতে হচ্ছে। আর মুনাফার চিন্তা থেকে বাছবিচারহীন যে সে বই রঙচঙে প্রচ্ছদে মুড়িয়ে প্রকাশ করার কারণে ক্রেতারা যেমন সঠিক বই বাছাই করতে পারছেন না, তেমনি মানহীন বই পড়তে মূল্যবান সময় ব্যয় করে তারা প্রতারিতও হচ্ছেন।


সর্বহারার রাজ সোনার পাথর বাটির মতই অবান্তর

এলিটতন্ত্র অত্যাচারী হলে সাধারণ মানুষ এলিটতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়। তিক্ত সত্য হল সাধারণ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবার জন্য নিজেদের মধ্য থেকে যাদেরকে নেতা বানায় বা যে সাধারণ মানুষগুলো অন্যদের সংঘবদ্ধ করে নেতা হয়ে ওঠে তারা মূলত এলিটই হয়ে ওঠে। এই নয়া এলিটরা প্রায়ই আন্দোলনের বুকে ছুরি মারে, আন্দোলনকে স্যাবোটাজ করে। এগুলো মূলত তাদের নয়া শ্রেণী সচেতনতার ফল। অনেক নয়া এলিট অবশ্য শ্রেণী সচেতনতার অভাবে বা বিদ্যমান এলিটতন্ত্রের বদলে নিজস্ব এলিটদের ক্ষমতায় আনার জন্য এলিটদের বিরুদ্ধে আপাত অবস্থান নিয়ে থাকে।


এক-চীন নীতি মেনে ট্রাম্পের প্রথম আপোষ

হাওয়া কি এত দ্রুত বদলে যাচ্ছে? আমাদের দেশীয় অনানুষ্ঠানিক আলাপে আমরা কাউকে যেমন পাগলা বলি ঠিক তেমন আমেরিকান নতুন প্রেসিডেন্ট ইতোমধ্যেই নিজের নামের আগে আমাদের দেশি ভাষায় এই ‘পাগলা’ বিশেষণ লাগিয়ে ফেলে হয়েছেন -পাগলা ট্রাম্প। আমেরিকান প্রেসিডেন্টের মত গুরুত্বপুর্ণ পদের লোক যদি যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনা না করে ডাইনে-বামে মন্তব্য করতে থাকে, এটা করে ফেলব, সেটা করে ফেলব বলতে থাকে তবে এর পরিণতিতে আমাদের তাকে ‘পাগলা’ উপাধি দিয়েই ডাকতে হবে। যে পাগলা শব্দের আর এক অর্থ হল - হাবা। তো সেই পাগলা ট্রাম্প কী এত তাড়াতাড়ি অন্তত চীনের ইস্যুতেই ঠান্ডা আর থীতু হয়ে গেল?


ভালোর বাসায় পুঁজির ডিম

আমরা প্রায় সবাই জানি যে কাকের বাসায় কোকিল ডিম পাড়তে আসে। সেই ডিমে কাক তা দেয় এবং তা ফুটে একটা কোকিল বের হয়ে আসে। দেখতে একইরকম- এই সুবিধা কাজে লাগিয়ে কোকিল তার বংশবিস্তার বজায় রাখে। কোকিল জানে না যে পুঁজিবাদেরও এমন স্বভাব। অন্যের বাসায় অন্যের মতো হয়ে সে ডিম পারবে। জহুরি না হলে তা টের করা যায় না। যেমন এই ভালোবাসা দিবস।


ভ্যালেন্টাইন ডে নয়, ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস

শহীদের রক্তে লাল ১৪ই ফেব্রুয়ারি মুক্ত বাজারী বিজাতীয় ভ্যালেন্টাইন ডে নয়, ১৪ ফেব্রুয়ারি স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস। বাংলাদেশের জনগণের লড়াই-সংগ্রামের গৌরবদীপ্ত ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি চাপা পড়ে গেছে ভ্যালেন্টাইন ডে নামক ভালোবাসা বেচা-কেনার আগ্রাসনে।

সম্পাদক: আবু মুস্তাফিজ

৩/১৯, ব্লক-বি, হুমায়ুন রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা